চট্টগ্রামে কিডনিসহ শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পাচারে জড়িত আন্তর্জাতিক চক্রের মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭। তারা ফেসবুকে পেজ খুলে কিডনি, লিভারসহ শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেনা-বেচা করত বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর খুলশী থানাধীন ভারতীয় ভিসা অফিসের সামনে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানাধীন মো. মতিউর রহমান শেখ এর ছেলে মোহাম্মদ আলী ডালিম (৩৫), কিশোরগঞ্জ জেলার কিশোরগঞ্জ সদর থানাধীন মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. আতিকুর রহমান রনি (৩৬) ও মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার মৃত মুজিবুর রহমান হাওলাদারের ছেলে মো. আলম হোসেন (৩৮)। গ্রেফতারকৃতরা ফেসবুকে পেজ খুলে কিডনি, লিভারসহ শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেনা-বেচা করত।

র‌্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে- তারা সাইফুল ইসলাম নামে একজন অসহায় লোককে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কিডনি বিক্রিতে উদ্বুদ্ধ করছে। তাকে ইন্ডিয়াতে পাচার করার জন্য আসামিরা তার পাসপোর্টে ভিসা লাগানোর কাজে সহযোগিতা করছিল। এ সময় তাদের হাতে নাতে ধৃত করা হয় এবং ঘটনাস্থল থেকে একজন ভিকটিম ও বিভিন্ন ডকুমেন্ট জব্দ করা হয়। চক্রটি এই পর্যন্ত প্রায় ৩০-৪০ জন লোককে প্রলুব্ধ করে অবৈধভাবে কিডনি ও লিভার দেবার জন্য ভারতে পাচার করেছে।

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবাছার বলেন, গ্রেফতার আতিকুর রহমান রনি আন্তর্জাতিক কিডনি ও লিভার পাচারকারী দলের সক্রিয় সদস্য। বাংলাদেশে এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা ডালিম। ইন্ডিয়াতে অবস্থান করে শাহিন নামে একজন বাংলাদেশি রনি, আলমদের মাধ্যমে কিডনি ও লিভারের ডোনার সংগ্রহ করে তাদেরকে ইন্ডিয়াতে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করে।

তিনি জানান, এক্ষেত্রে ডোনারদের তারা ৪ থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে থাকে। ইন্ডিয়ায় ডোনারদের সঙ্গে রোগীদের রক্ত, কিডনি ও লিভার ক্রস ম্যাস করিয়ে থাকেন। শুধু কিডনির ও লিভার এর জন্য চক্রটি রোগীদের নিকট থেকে ১৫-২০ লাখ টাকা নিয়ে থাকেন।

মো. নূরুল আবাছার আরও বলেন, ডোনার পাওয়ার পর ওই চক্রের সদস্যরাই তাদের পাসপোর্ট ও ইন্ডিয়ান ভিসা লাগানোর ব্যবস্থা করে দেন। অতঃপর ঢাকার একটি হাসপাতালে তাদের রক্ত, কিডনি ও লিভার পরীক্ষা করানো হয়। রিপোর্ট ঠিক থাকলে ওই লোকদেরকে তারা ইন্ডিয়াতে পাচার করা হয়।