কুমিল্লায় জোড়া খুনের ঘটনার প্রায় ৭ বছর পর আলোচিত ওই মামলার আসামি মাজেদা বেগমকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শনিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার দুর্গম একটি পাহাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর একটি আভিযানিক দল।
মাজেদা বেগম (৪৫) জেলার মুরাদনগর উপজেলার লাজৈর গ্রামের মো. সেলিমের স্ত্রী। তিনি পারিবারিক বিরোধের জের ধরে দুটি শিশুকে গলা কেটে এবং শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যার এজাহারনামীয় আসামি। চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত এ ঘটনার পর দীর্ঘ ৭ বছর ধরে পলাতক ছিলেন মাজেদা বেগম।
এর আগে ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল লাজৈর গ্রামের মো. বিল্লাল হোসেনের ছেলে আরাফাত (৬) ও শাহ আলমের ছেলে জসিম (৭) নামে দুই অবুঝ শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি ইয়াছমিন বেগম আর গ্রেফতার মাজেদা দ্বিতীয় এজাহারনামীয় আসামি।
এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই মাজেদা বেগম পলাতক ছিলেন। উক্ত ঘটনায় ওই বছরের ২১ এপ্রিল মুরাদনগর থানায় ইয়াসমিনকে ১নং, মাজেদা বেগমকে ২নং ও অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করে নিহত আরাফাতের পিতা বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
র্যাব জানায়, ঘটনার পর ৭ বছরের অধিক সময় ধরে রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিজের নাম বদলে কখনো গৃহকর্মী, কখনো গার্মেন্টকর্মী আবার কখনো মহিলা ওঝাঁর ছদ্মবেশে আত্মগোপন করেছিলেন মাজেদা বেগম। সর্বশেষ তিনি গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকের ছদ্মবেশে গা-ঢাকা দিয়ে ছিলেন।
কিন্তু করোনা মহামারীর প্রভাবে গার্মেন্টস কর্মী ছাঁটাই হওয়ায় চাকরি হারিয়ে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার পাহাড়বেষ্টিত ইউনিয়ন দক্ষিণ চিকনছড়ার দুর্গম পাহাড়ি গ্রাম বাগমারার রাবার বাগানের পাশে অবস্থিত ভাইয়ের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন।
আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় কতিপয় দালালের মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনাও করেন মাজেদা বেগম। সম্প্রতি র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা ক্যাম্প চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার দীর্ঘদিন ধরে পলাতক এই আসামিকে আটকে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে।
প্রযুক্তির সাহায্যে এবং মাঠপর্যায়ে গোয়েন্দা নজরদারির সূত্র ধরে অবশেষে র্যাব মাজেদা বেগমের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দক্ষিণ চিকনছড়া ইউনিয়নের বাগমারা নামক দুর্গম পাহাড়ি গ্রামের একটি বাড়ি থেকে মাজেদা বেগমকে (৪৫) আটক করতে সক্ষম হয়।
Development by: webnewsdesign.com