মুখে মাস্ক ছিল না মো. শরীফের, এমনকি সঙ্গেও ছিল না। আর তখনই মার্কেটের ভেতরে চলছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। আদালত দেখেই শরীফ দৌড় দিলেন। পুলিশ সদস্যরা তাঁকে ধরে আনেন। আদালত এ সময় তাঁর কাছে জানতে চান, কেন মাস্ক পরেননি?
জবাবে শরীফ প্রথমে বলেন, মাস্ক একটু আগে ফেলে দিয়েছেন। এরপর তিনি বলেন, মাস্ক তাঁর সঙ্গে ছিল, ওয়াশরুমে গিয়েছিলেন বলে ফেলে দিয়েছেন। এ সময় তিনি আদালতের সঙ্গে বিধিবর্হিভূত আচরণ করেন। এ কারণে তাঁর অর্থদণ্ড ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়।
রাজধানীর নিউমার্কেটের আজ শনিবার বিকেলের ঘটনা এটি। নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকায় স্বাস্থ্যবিধিবিষয়ক অভিযান চালানো হয়। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি না মানায় পথচারী ও ব্যবসায়ীদের অপরাধের মাত্রা বুঝে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। তবে অভিযান শেষে অভিযানস্থলে গিয়ে দেখা যায় আগের চিত্র। চলাচলকারী অনেকের মুখে মাস্ক থাকলেও বেশির ভাগের তা নেই। কারও মাস্ক ঝুলছিল থুতনি ও গলায়।
দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১০ জানুয়ারি ১১টি বিধিনিষেধ জারি করে। ১৩ জানুয়ারি থেকে এটি কার্যকর হয়েছে। সরকারি বিধিনিষেধের ১৭তম দিন আজ। এ নির্দেশনা কার্যকর করতে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়।
বিকেল ৪টার দিকে নিউমার্কেটের ২ নম্বর গেটের সামনে অভিযান শুরু হয়। অভিযানে দেখা যায়, পথচারীদের অনেকের মুখে মাস্ক নেই। চলাচলকারীরা ভ্রাম্যমাণ আদালতকে দূর থেকে দেখেই পকেট ও ব্যাগ থেকে মাস্ক বের করে পরছেন। কেউ কেউ সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় মাস্ক না পরেই সারা দিন ঘুরেছেন। কেউ–বা সঙ্গে মাস্ক থাকলেও তা মুখে না রেখে পকেটে রেখেছেন। আদালতের মুখোমুখি হলেই মানুষ নানা অজুহাত দিচ্ছেন।
তেমনই একজন যুথী নামের এক তরুণী। তিনি স্বামীর সঙ্গে নিউমার্কেটে এসেছেন। তবে তাঁর মুখে কোনো মাস্ক ছিল না। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত মাস্ক না পরার কারণ জানতে চান। যুথী বলেন, তিনি হিজাব পরেছেন, এ কারণে মাস্ক পরেননি। এ সময় তাঁর স্বামী তাঁকে চলে আসতে বলেন। মাস্ক না পরার অপরাধে তাঁকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
এ অভিযানে নিউমার্কেট এলাকায় ৭ জনের কাছ থেকে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি ২৬৯ লঙ্ঘনের অপরাধে ২ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিষা রানী কর্মকার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক পরার বিষয়ে মানুষ উদাসীন। বাইরে অনেকেই মাস্ক পরছেন না। মানুষকে সচেতন করতেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে এ অভিযান, জরিমানা আদায় করে মানুষকে সচেতন করা যাবে না। মানুষকে মাস্ক পরার বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে।
Development by: webnewsdesign.com