মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন মোহছেনা আক্তারের প্রথম স্বামী মোহম্মদ তৈয়ব। সেখানে তার জমানো ও তার রুমমেটদের দেওয়া ৮ লাখ টাকা আনতে গিয়েই দ্বিতীয় স্বামী রিদুয়ান ও তার সহযোগী সুজনের হাতে খুন হয়েছেন মোহছেনা। পেকুয়া সদরের নুইন্যামুইন্যা ব্রিজ সংলগ্ন বিল থেকে মোহছেনা আক্তারের রগকাটা মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বুধবার (২৬ জানুয়ারি) ভোররাতে পুলিশ ও র্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে প্রধান অভিযুক্তসহ দুইজনকে গ্রেফতার করে। এরপরই বেরিয়ে আসে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পেকুয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, বুধবার ভোররাতে পুলিশ ও র্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে মোহছেনার দ্বিতীয় স্বামী রিদুয়ান ও তার সহযোগী সুজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। মোবাইল রেকর্ড ও একটি খালি স্ট্যাম্পও হাতে এসেছে পুলিশের। গ্রেফতাররা হলেন চকরিয়ার কোনাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ কোনাখালীর আবদুল হাকিম গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে রিদুয়ান সিকদার হৃদয় ও তার ভাগিনা ছাদেরঘোনার কবির হোসেনের ছেলে সুজন।
এদিকে, নিহতের ছেলে ও মালয়েশিয়ায় রিদুয়ান ও তৈয়বের সঙ্গে বসবাসকারী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রিদুয়ান ও নিহতের আগের স্বামী তৈয়ব একই রুমে থাকত। তারা ভাল বন্ধু ছিলেন। এক সড়ক দুর্ঘটনায় তৈয়ব মারা যায়। এরপর তৈয়বের জমানো কিছু টাকা ও মালয়েশিয়ায় বসবসরাত প্রবাসীদের আর্থিক সহযোগিতার ৮ লাখ টাকা তৈয়বের স্ত্রী মোহছেনাকে দিতে রিদুয়ানকে দেওয়া হয়। ওই টাকা দেওয়ার কথা বলেই মোহছেনার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে বিয়ে করেন।
এবিষয়ে নিহতের ছেলে আরিফ বলেন, সোমবার আমার মাকে টাকা দেওয়ার কথা বলেই ডেকে নিয়ে যায় আমার সৎ বাবা রিদুয়ান। তবে সেটা কিসের টাকা আমি জানিনা। তবে মা যাওয়ার সময় ব্যাগে করে একটি স্ট্যাম্প নিয়ে যায়। যা পরে পুলিশ জব্দ করেছে। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই ৮ লাখ টাকা মোহছেনাকে দেওয়ার জন্য স্ট্যাম্পমূলে চুক্তি করেছিল রিদুয়ান।
পেকুয়ার ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানায়, সোমবার বিকেল থেকে রিদুয়ান ও সুজনকে চকরিয়ার কোনাখালী বটতলী বাজারের পাহারাদার বদিউল আলম প্রকাশ বদাইয়ার ছেলে হান্নান, ছাদেরঘোনা এলাকার আবু তাহেরের ছেলে ছাদেক, বটতলী বাজারের পান ব্যবসায়ী খাসপাড়া এলাকার বাইশ্যার ছেলে নাজেম উদ্দিন নাজুকে একাধিকবার বৈঠক করতে দেখেছেন। এছাড়া ঘটনার পর থেকেই তাদেরকে এলাকায় আর দেখা যাচ্ছেনা বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
পেকুয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলি বলেন, ওই ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে যার একমাত্র আসামী রিদুয়ান। এমন একটি হত্যা কখনো একজন করতে পারেনা। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই হত্যায় কারা কারা জড়িত জানা যাবে।
র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. খাইরুল ইসলাম সরকার বলেন, আমরা ভোররাতে অভিযানটি শেষ করেছি। তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু তথ্য পেয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে সব বলা যাচ্ছে না।
Development by: webnewsdesign.com