দাম্পত্য কলহের জেরে অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুকে তাঁর স্বামী হত্যার পর বন্ধুর সহায়তা নিয়ে লাশ গুমের চেষ্টা করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মারুফ হোসেন সরদার এ কথা বলেন।
এসপি মারুফ হোসেন সরদার বলেন, দীর্ঘদিনের দাম্পত্য কলহের জেরে শিমুর স্বামী তাঁকে হত্যা করেন বলে স্বীকার করেছেন। হত্যার পর লাশ গুমে তিনি বন্ধু ফরহাদের সহযোগিতা নেন।
ঢাকার কেরানীগঞ্জে সড়কের পাশ থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় গতকাল সোমবার শিমুর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তাঁর বন্ধু ফরহাদকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল দিবাগত রাত চারটার দিকে রাজধানীর কলাবাগান থানাধীন ৩৪ গ্রীন রোড এলাকা থেকে তাঁদের দুজনকে আটক করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে হুন্দাইয়ের ছাই রঙের একটি ব্যক্তিগত গাড়ি উদ্ধার করা হয়। শিমুর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীমের বাড়ি ফরিদপুরের কমলপুর গ্রামে। তাঁদের ১৫ বছরের এক মেয়ে ও ৭ বছরের এক ছেলে আছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, গত রোববার সকাল সাতটা থেকে আটটার মধ্যে কোনো এক সময়ে শিমুকে হত্যা করা হয়। যে গাড়ি ব্যবহার করে শিমুর লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়েছে, সে গাড়ি জব্দ করে থানায় নিয়েছে পুলিশ। অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।
আজ বেলা দেড়টার দিকে নিহত শিমুর বড় ভাই হারুন অর রশিদ ও শহিদুল ইসলাম খোকন এবং ছোট বোন ফাতেমা নিশা কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করতে যান। বিকেল চারটার দিকে নিহত শিমুর বড় ভাই হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।
শাখাওয়াত–শিমু দম্পতি ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিমুর ছোট বোন ফাতেমা নিশা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এমন কোনো দিন নেই যে বোনের সঙ্গে আমার কথা হয়নি। আমার বোনের স্বামী তাঁকে মেরেছে কি না, সেটি আমরা জানি না। ১৮ বছরের সংসারে তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কিংবা অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কলহ দেখিনি। আমি শিমুর স্বামীর সঙ্গে কথা বলব। তাঁকে জিজ্ঞাসা করব, কেন আপনি হত্যাকাণ্ডটি করেছেন? ভালোবেসে বোনকে বিয়ে করেছিলেন। ১৮ বছরের সংসার আপনাদের। বোনের অপরাধটা কী ছিল?’
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ছালাম মিয়া বলেন, গতকাল বেলা তিনটার দিকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) থেকে এক লোক ফোন করে জানান, মিডিয়াকর্মী এক নারীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে, শিমুকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। শিমুর স্বামী ও তাঁর বন্ধু ফরহাদ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
Development by: webnewsdesign.com