যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির পক্ষ থেকে লবিস্ট নিয়োগে অর্থ ব্যয় করার কোনো তথ্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া দলটির ব্যয় বিবরণীতে উল্লেখ নেই। বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়টি তদন্তের আইনি সুযোগ বা সক্ষমতাও ইসির নেই। সরকারের অন্য কোনো সংস্থা অর্থ পাচারের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিলে তা পর্যালোচনা করবে ইসি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে ইসি সচিবালয়ের সচিব হুমায়ুন কবির খোন্দকার সাংবাদিকদের এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান।
যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগে বিএনপির ব্যয় বার্ষিক হিসাবে দেখিয়েছে কি না, না দেখালে এ বিষয়ে তদন্তের অনুরোধ জানিয়ে ইসিকে চিঠি দিয়েছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। আজ ইসির বৈঠকে ওই চিঠি নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে ইসি সচিব হুমায়ুন কবির খোন্দকার বলেন, বিএনপির লবিস্ট নিয়োগের বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী যে চিঠি দিয়েছেন, কমিশন বৈঠকে তা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো কমিশনে যে অডিট রিপোর্ট জমা দেয়, তা পর্যালোচনা করে দেখা হয়। বিএনপি যে অডিট রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তাতে এমন কোনো তথ্য নেই যে বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করার জন্য কোনো অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। তা ছাড়া বিদেশে অর্থ ব্যয় করা হলে তা তদন্ত করার আইনি কাঠামো ও সক্ষমতা নেই। আইনি কাঠামোতে তথ্য পাচারসংক্রান্ত বিষয় পড়ে না।
ইসি সচিব বলেন, জামায়াতে ইসলামী কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নয়। ফলে তাদের বিষয়ে কমিশনের কিছু করণীয় নেই। কমিশনের এই সিদ্ধান্ত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
লবিস্ট নিয়োগে ব্যয়ের বিষয় প্রমাণিত হলে এই বিষয়ে ইসির ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে হুমায়ুন কবির বলেন, এ রকম বিষয় যদি প্রমাণিত হয় এবং কমিশনকে যদি জানানো হয়, তাহলে কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব প্রথমে জানান, বিএনপির দাখিল করা ২০১৯–২০২০ সালের অডিট প্রতিবেদন খতিয়ে দেখা হয়েছে। পরে অবশ্য তিনি বলেন, ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়ের ব্যয় বিবরণী দেখা হয়েছে।
বিএনপিও অভিযোগ করেছে, আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। ইসি আওয়ামী লীগের ব্যয় বিবরণী খতিয়ে দেখেছে কি না বা দেখবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ ইসির কাছে আসেনি। বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে এ ধরনের কিছু ছিল না। এ বিষয়ে কমিশন বলতে পারবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, আইন অনুযায়ী কোনো দল পরপর তিনবার আয়–ব্যয়ের অডিট রিপোর্ট ইসিতে জমা না দিলে শুনানি নিয়ে ইসি ওই দলের নিবন্ধন বাতিল করতে পারে।
এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম ও বেগম কবিতা খানম উপস্থিত ছিলেন।
Development by: webnewsdesign.com