কুমিল্লায় ‘ইউটিউব সেলিব্রেটি’ করার প্রলোভনে এক স্কুলছাত্রীকে (১৫) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এক আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃত আইনজীবী দুই সন্তানের জনক। তিনি পরিবার নিয়ে কুমিল্লা নগরীর দৌলতপুর রেলগেট এলাকায় বসবাস করেন।
মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানিয়েছেন, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানাধীন মধ্যম আশ্রাফপুর এলাকার একটি সাততলা ভবনের ভাড়া বাসায় এসব অপকর্ম করতেন ওই আইনজীবী। সেখান থেকে সোমবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় ওই বাসা থেকে নির্যাতিত স্কুল ছাত্রী, তার ভাই এবং আরেক নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সদর দক্ষিণ থানায় এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।
মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, ‘রবিবার দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রীর মা আমাদের কাছে এসে বলেন তাঁর দুই সন্তান নিখোঁজ রয়েছে। এরপর আমরা ছায়া তদন্ত শুরু করে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ভিকটিমকে উদ্ধার এবং ধর্ষককে গ্রেপ্তার করি।’
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আইনজীবী জানিয়েছেন, নির্যাতিতার পরিবার তাঁর পূর্বপরিচিত। তিনি ভিকটিমকে ভাগ্নি এবং তার ভাইকে মামা বলে ডাকতেন। তিনি তাদের পড়াশোনা ও অন্যান্য ব্যাপারে সহযোগিতার নাম করে ভিকটিমের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। এক পর্যায়ে তিনি ভিকটিমের কাছে নিজেকে একজন জনপ্রিয় ইউটিউবার হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, তিনি বিভিন্ন ছেলে-মেয়েকে ইউটিউব সেলিব্রেটি করার মাধ্যমে তাদেরকে আর্থিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
২৫ নভেম্বর মেয়েটির পরিবারকে না জানিয়ে স্কুল থেকে তাকে নিয়ে যান ওই আইনজীবী। এক পর্যায়ে মধ্যম আশ্রাফপুরে তাঁর ভাড়া বাসায় নিয়ে ভিকটিমকে ইউটিউব সেলিব্রেটি, ভালোভাবে পড়াশোনা করানোসহ বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণ করেন। ভিকটিমের মা বিষয়টি টের পেয়ে তাদেরকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। এরপর তিনি প্রলোভন দিয়ে গত ১৭ ডিসেম্বর ভিকটিম ও তার ভাইকে ফের তাঁর বাসায় নিয়ে আসেন।
মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, এ দুজনকে বাসায় এনে আটকের পর জাহিদ চৌধুরী তাঁর হীন স্বার্থ বাস্তবায়নের জন্য আরেক নারীকে (৩২) চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁর ওই ভাড়া বাসায় নিয়ে আসেন। এক পর্যায়ে ভিকটিমের ভাই (২০) ও ওই নারীকে একটি রুমে আবদ্ধ রেখে তাঁদেরকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করেন। পরে ভিকটিমকে বেশ কয়েক দিন ধরে ধর্ষণ করেন তিনি। ভিকটিমের ভাই এতে বাধা প্রদান করতে চাইলে আইনজীবী তাঁকে হুমকি দিয়ে বলেন, ওই নারীর সঙ্গে তাঁর শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আইনজীবী এসব অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান তিনি।
Development by: webnewsdesign.com