ব্রেকিং

x

বিচারক কামরুন্নাহার ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা হারালেন

সোমবার, ২২ নভেম্বর ২০২১ | ১০:২১ অপরাহ্ণ | 142 বার

বিচারক কামরুন্নাহার ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা হারালেন

ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর সাবেক বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারের ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা প্রত্যাহার করে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে বর্তমানে সংযুক্ত আছেন কামরুন্নাহার। তিনি আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় আপিল বিভাগে সশরীর উপস্থিত হন। আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ১ নম্বর ক্রমিকের মামলায় শুনানি নিয়ে তাঁর ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা প্রত্যাহারের আদেশ দেওয়া হয়। পূর্ণাঙ্গ রায় পরে প্রকাশ হবে।

স্থগিতাদেশ থাকার পরও ধর্ষণ মামলার এক আসামিকে জামিন দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আপিল বিভাগ গত বছরের ১২ মার্চ ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর তৎকালীন বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারকে ২ এপ্রিল আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

যে মামলায় জামিন নিয়ে কামরুন্নাহারকে তলব করা হয়েছিল, সেই ফৌজদারি আবেদন ১৫ নভেম্বর ‘রাষ্ট্র বনাম আসলাম সিকদার’ শিরোনামে আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ১ নম্বর ক্রমিকে ওঠে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ সেদিন বলেছিলেন, আদেশ দেওয়া হলো। তবে কী আদেশ দেওয়া হয়, তা জানা যায়নি।

এরপর আজ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে ‘রাষ্ট্র বনাম আসলাম সিকদার’ শিরোনামে মামলাটি আদেশের জন্য কার্যতালিকায় ১ নম্বর ক্রমিকে ওঠে। এ অবস্থায় আজ সকালে আপিল বিভাগে হাজির হন কামরুন্নাহার। আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম ভার্চ্যুয়ালি চলে।

আপিল বিভাগের কার্যক্রম শুরুর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আদালতকক্ষে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মী, আইনজীবী ও আদালতসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের করে দেওয়া হয়। এরপর আর কাউকে বিচারকক্ষে ঢুকতে দেখা যায়নি। বেলা পৌনে ১১টার দিকে বিচারকক্ষে গিয়ে কামরুন্নাহারকে দেখা যায়নি। বেলা সোয়া ১১টার দিকে ভার্চ্যুয়াল আদালতে যুক্ত হলে দেখা যায়, আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ২ নম্বর ক্রমিকে থাকা মামলাটির শুনানি শুরু হয়েছে। পরে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আদেশের বিষয়টি জানান।

যে মামলার জামিন ঘিরে তলব
ধর্ষণের ওই মামলায় ২০১৯ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট থেকে জামিন পান বেসরকারি একটি টেলিভিশনের সাবেক অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপক আসলাম সিকদার। এই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার আদালত একই বছরের ২৫ জুন জামিন স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।

আবেদনটি আপিল বিভাগে বিচারাধীন অবস্থায় গত বছরের ২ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ ওই আসামিকে জামিন দেন। সর্বোচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের পরও আসামিকে জামিন দেওয়ার বিষয়টি আদালতের নজরে আনে রাষ্ট্রপক্ষ।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১২ মার্চ আপিল বিভাগ সংশ্লিষ্ট বিচারককে ব্যাখ্যা জানাতে আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে আসলাম সিকদারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন।

২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আসলাম সিকদারের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মামলা করা হয়। মামলায় গত বছরের ১৪ অক্টোবর রায় দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫-এর বিচারক। রায়ে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসলাম সিকদারকে খালাস দেওয়া হয়।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ১৫ নভেম্বর বলেছিলেন, খালাসের ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টে আপিল করেছে। হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন।

বিচারিক দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার
কামরুন্নাহার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক ছিলেন। তিনি রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় ১১ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন। রায়ে পাঁচ আসামির সবাইকে খালাস দেওয়া হয়। ধর্ষণের অভিযোগের ক্ষেত্রে ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলে পুলিশ যেন মামলা না নেয়, সে বিষয়ে আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। তবে লিখিত রায়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণ মামলা না নেওয়া বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ নেই।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের আলোকে এ নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়। ১৩ নভেম্বর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, প্রধান বিচারপতির কাছে বিচারক হিসেবে কামরুন্নাহারের দায়িত্ব পালন নিয়ে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সে জন্য একটা চিঠি দেবেন তিনি।

পরদিন সকালে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ওই বিচারককে (কামরুন্নাহার) আদালতে না বসতে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে কামরুন্নাহারের বিচারিক ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে তাঁকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

সেদিন সন্ধ্যায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোছা. কামরুন্নাহারকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে কামরুন্নাহারকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হলো।

নামাজের সময়সূচি

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১০ পূর্বাহ্ণ
  • ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
  • ৩:৩৬ অপরাহ্ণ
  • ৫:১৫ অপরাহ্ণ
  • ৬:৩৪ অপরাহ্ণ
  • ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ

Development by: webnewsdesign.com