জীবন রক্ষাকারী ঔষধের ভেজাল, নকল ও নিম্নমানের বিস্তার রোধ কোন ক্রমেই প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। প্রতি রোধের কার্যকরী তদারকি ও পদক্ষেপের অভাবে ঔষধ খাতে চলছে ভয়াবহ নৈরাজ্য। যে কারনে দেশের মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়তে চলেছে। বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশী ঔষধের সুনাম ও রপ্তানির সাফল্যের পরও দেশ জুড়ে ঔষধের এই নৈরাজ্য বন্ধ করা যাচ্ছে না। অভিজ্ঞতার অভাবে রোগীরা নির্ভর করছে কমিশন নির্ভর ডাক্তারদের প্রেসক্রিপশনের উপর। অন্যদিকে ডাক্তারদের খেয়াল খুশী মত ঔষধ কোম্পানী গুলোর চাপিয়ে দেওয়া ঔষধ লিখে দিচ্ছেন। ঔষধ কোম্পানী গুলো দাবী করছে, গন মাধ্যম গুলোতে ঔষধের প্রচারের সুযোগ না থাকায় তাঁরা মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভ দিয়ে ঔষধের মার্কেটিং করান। এর ফলে ক্রেতারা জেনে বুঝে প্রয়োজনীয় ঔষধটি কিনতে পাচ্ছেনা। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে নকল, ভেজাল ও নিন্মমানের ঔষধ কিনতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সম্প্রতি দেশ ব্যাপী মডেল ফার্মেসী কার্যকরের উদ্যেগ নিলেও সিন্ডিকেটের তৎপরতার কারনে নকল, ভেজাল ও নি¤œমানের ঔষধ বিপনন ঠেকানো যাচ্ছে না। সম্প্রতি কুরিয়ার সার্ভিসে নকল ও ভেজাল ঔষধ বিপননের একটি চক্র র্যাবের হাতে আটক হয়েছে। সূত্র জানায়, দেশের ঔষধ কোম্পানী গুলোর মধ্যে বিপনন নিয়ে এক অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগীতা চলছে। নতুন ঔষধ বাজারজাত করার জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়ার সুযোগ না থাকায় কোম্পানী গুলো নির্ভর করছে মেডিকেল প্রমোশন কর্মীদের উপর। ১৯৮২সালের ঔষধ নীতিতে ঔষধ বিপননে প্রচারের আইনের সুযোগ করে তা রোহিত করা হয়। পাশাপাশি আইন লঙ্ঘন করে বিজ্ঞাপন দিলে ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এই প্রতি বন্ধকতার ফলে বিকল্প পন্থায় নিজেদের অনুকূলে ঔষধের বাজার নিয়ন্ত্রন রাখতে চায় কোম্পানী গুলো। বড় কোম্পানী গুলোর পাশাপাশি ছোট কোম্পানী গুলোও পাশাপাশি নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধ বিক্রিতে পিছিয়ে নেই। শহরের বাইরে অপেক্ষাকৃত প্রত্যন্ত অঞ্চল, বস্তি ও গার্মেন্টস এলাকার ঔষধের দোকান গুলোতে ছোট কোম্পানী গুলোর ঔষধ বেশী বিক্রয় হয়। ঔষধ সম্পর্কে নূন্যতম ধারনা না থাকায় সুযোগ নিয়ে হাতুড়ে ডাক্তার ও ঔষধের দোকানদাররা নিম্নমানের ঔষধ দিয়ে দিচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় কৃতিম সংকট দেখিয়ে ঔষধের দোকানদাররা চড়া মূল্যে ঔষধ বিক্রি করছে ক্রেতাদের কাছে। একটি বেসরকারী সংস্থার মতে নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধের বার্ষিক বিক্রি প্রায় ১০০০ কোটি টাকা। যা মোট বিক্রির প্রায় ১০ ভাগ এহেন ঔষধ নৈরাজ্যের পরিস্থিতি কঠোর আইনের মাধ্যমে প্রতিরোধ করে দেশের সাধারন নিরীহ মানুষের জীবন বাঁচানোর ব্যাবস্থা গ্রহন করা অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে ঔষধ নিয়ন্ত্রন অধীদপ্তরের যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহনের আশা রাখে দেশের মানুষ। যাতে করে ভাল মানের ঔষধ ক্রয় করে রোগ নিরাময়ের মাধ্যমে সুস্থ থাকতে পারে সাধারন মানুষ।
Development by: webnewsdesign.com