ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রভাবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।তবে কক্সবাজারে ৪ নম্বর সংকেত অব্যাহত রয়েছে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ আব্দুল হামিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবিলায় সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট ২২টি মন্ত্রলণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত যেকোনো সময় ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আঘাত হানতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রভাবে সাতটি জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলাগুলো হলো- খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী ও ভোলা।
এদিকে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ ধেয়ে আসায় দেশের ৭টি জেলা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ওইসব জেলার লোক সরিয়ে নেয়ার জন্য আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।
ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসায় খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও ভোলা জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় রাখা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সাত জেলার লোক সরিয়ে নেয়ার জন্য আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ২ হাজার করে ১৪ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট এবং নগদ ১০ লাখ করে মোট ৭০ লাখ টাকা, ২০০ টন করে এক হাজার ৪০০ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’
নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ৫ লাখ করে মোট ৬০ লাখ টাকা, ১০০ টন করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী আরও বরাদ্দ দেয়া হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
এনামুর রহমান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি শনিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। তবে এতে ফসল ছাড়া বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা নেই।’
তিনি বলেন, ‘এটার (বুলবুল) যে গতি ও যেদিকে অগ্রসর হচ্ছে তাতে আঘাত হানবে, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে পাঁচ থেকে সাত ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে। গতি আরও বাড়লেও যে প্রস্তুতি রয়েছে, তাতে ফসল ছাড়া বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কা নেই।’
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্য রাতের মধ্যে আঘাত হানতে পারে। এ জন্য ঝড়ের ১৪ ঘণ্টা আগে লোকজন সরিয়ে নেয়ার জন্য বলা হয়, যাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হয়।’
ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও জেলা উপজেলা সংশ্লিষ্টদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় জেলা-উপজেলা পর্যায়ে দেশের ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে যথাসময়ে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হবে।’
শনিবার বেলা ১১টায় সচিবালয়ে প্রস্তুতি সভায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান এনামুর। সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ্ কামাল এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Development by: webnewsdesign.com