যশোরে একটি প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা লেগে দুই বোনসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এতে আরও চারজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে যশোর শহরের বিমান অফিস মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- যশোর শহরের লোন অফিসপাড়ার শফিকুল ইসলামের স্ত্রী ডা. তনিমা ইয়াসমিন পিয়াশা (২৫) তার বোন শহরের রবীন্দ্রনাথ সড়কের বাসিন্দা সুমন ইসলামের স্ত্রী তানজিলা ইয়াসমিন ইয়াশা (৩০), একই এলাকার বাসিন্দা পিয়াসার খালাতো ভাই মনজুর হোসেনের স্ত্রী তিথী (৩৫)।
আহতরা হলেন- মঞ্জুর, শফিকুল, শাহিন ও হৃদয়।
যশোর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত ১টার দিকে তারা প্রাইভেটকার যোগে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে বিমান অফিস মোড়ে পৌঁছালে প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের একটি বৈদ্যুতিক পিলারে আঘাত করে। এতে প্রাইভেটকারটি দুমড়েমুচড়ে গিয়ে আরোহীরা গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে তিনজনের মৃত্যু হয়। আহতদের চিকিৎসা চলছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. কাজল কান্তি মল্লিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতদের স্বজন রোহান উদ্দিন জানান, বছর খানেক আগে ডা. তনিমা ইয়াসমিন পিয়াশার সঙ্গে শফিকুল ইসলাম জ্যোতির বিয়ে হয়। আগামী ২৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে পিয়াশাকে ঘরে তুলে নেয়ার জন্য তারিখ নির্ধারিত ছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে এর প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছিল।
নিহতদের স্বজন ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে শফিকুল ইসলাম জ্যোতি নিজেই প্রাইভেটকার চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আত্মীয়দের বাড়িতে দাওয়াত দিতে বের হন। রাত ১টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে শহরের বিমান অফিস মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেটকারটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আঘাত করে পাশের দেয়াল ভেঙে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ সাতজনই আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে হাসপাতালে আনার আগেই ওই তিন নারী মারা যান।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. কাজল কান্তি মল্লিক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত তিথীর স্বামী মঞ্জুর হোসেন বলেন, শুক্রবার রাতে শফিকুল ইসলাম জ্যোতি প্রাইভেটকার নিয়ে আমাদের বাসায় আসেন। শহরে ঘুরতে বের হওয়ার কথা বলে গাড়িতে আমার স্ত্রী ও সন্তানকে তুলে নেন। ওই গাড়িতে আমার খালাতো দুই বোনও ছিল। তারা শহরের পালবাড়ি, আরবপুর এলাকায় আলোকসজ্জা দেখতে ও বিয়ের দাওতায় দিতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনা ঘটে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাইভেটকারটি চালাচ্ছিলেন ডা. তনিমা ইয়াসমিন পিয়াশার স্বামী শফিকুল ইসলাম জ্যোতি। তিনি পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন আছেন। দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটলো তা জানার জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
Development by: webnewsdesign.com