শিশুদের সহায়তার জন্য স্থাপিত চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮–এ গত সাড়ে ৫ বছরে (জানুয়ারি ২০১৬ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২১) কল এসেছে ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩০৭টি। এ সময়ে হেল্পলাইনের মাধ্যমে তথ্য পেয়ে ২ হাজার ৬৯৪টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের চাইল্ড সেনসিটিভ সোশ্যাল প্রটেকশন ইন বাংলাদেশ (সিএসপিবি) প্রকল্পের আওতায় ইউনিসেফের সহায়তায় চাইল্ড হেল্পলাইন চলছে।
আজ রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এসব তথ্য জানায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। ২০২৪ সালে সিএসপিবি প্রকল্প শেষ হবে। এরপরও এই প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য অনুরোধ জানিয়ে ইউনিসেফকে চিঠি দেওয়ার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
বৈঠক সূত্র জানায়, দেশের যেকোনো প্রান্তে শিশুরা কোনো ধরনের সহিংসতা, নির্যাতন ও শোষণের শিকার হলে যে কেউ ১০৯৮ হেল্পলাইনে কল (বিনা মূল্যে) করে সহায়তা চাইতে পারে। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হেল্পলাইনে যত কল এসেছে, তার মধ্যে ৫ হাজার ৮৭২টি ছিল শিশু নির্যাতন–সম্পর্কিত। পারিবারিক সমস্যা–সম্পর্কিত কল এসেছে ৫ হাজার ৩৪৭টি, গৃহহীন ও হারিয়ে যাওয়া শিশুর বিষয়ে কল এসেছে ৯ হাজার ২১৩টি। আইনি সহায়তা চেয়ে কল এসেছে ১৯ হাজার ১৩৮টি, স্বাস্থ্যবিষয়ক তথ্য ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ৪৭ হাজার ৪৫৩ শিশুকে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে পড়াশোনার বিষয়ে স্কুলশিক্ষক, পরিচালনা কমিটি ও অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হয়েছে ১৮ হাজার ২১৭ জন শিশুকে। মাদক ও অন্যান্য নেশার ব্যবহার ও ক্ষতি সম্পর্কে পরামর্শ ও নিরাময় সেন্টারে রেফার (পাঠানো) করা হয়েছে ৪৬৮টি শিশুকে আর কাউন্সিলিং সেবা দেওয়া হয়েছে ১২ হাজার ৬৩৪টি শিশুকে।
বৈঠকে সংসদীয় কমিটি বাল্যবিবাহ বন্ধে আরও জোর দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেয়। কমিটির একজন সদস্য বলেন, তুলনামূলক বাল্যবিবাহ কম বন্ধ হয়েছে। এর জবাবে মন্ত্রণালয় জানায়, এই প্রকল্প শুধু বাল্যবিবাহ বন্ধ নিয়ে কাজ করে না। বাল্যবিবাহ নিয়ে মূলত কাজ করে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়। সংসদীয় কমিটি এই প্রকল্প নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানোর নির্দেশনা দেয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, এই প্রকল্প শিশু সুরক্ষা, শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বাল্যবিবাহ বন্ধে এটিকে আরও ভালোভাবে কাজে লাগানো যায়। তাঁরা মনে করেন, এই প্রকল্প চালিয়ে নেওয়া উচিত। যদি ইউনিসেফ অর্থায়ন না করে, তাহলে সরকারি অর্থায়নে এটি চালু রাখা প্রয়োজন।
বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, আ কা ম সরওয়ার জাহান, আরমা দত্ত ও শবনম জাহান।
Development by: webnewsdesign.com