গাইবান্ধার এক কিশোরীর সঙ্গে সিলেটের এক কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তারা বিয়ে করতে চায়। তবে দুজনের পরিবার রাজি না হওয়ায় তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। গতকাল মঙ্গলবার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
গাইবান্ধার কিশোরীর পরিবার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা যায়, কিশোরী একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। সে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা করে। ঢাকায় খেলতে গিয়ে সিলেটের এক খেলোয়াড় কিশোরীর সঙ্গে তার পরিচয়। তাদের মধ্যে একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা পরস্পরকে বিয়ে করার কথা ভাবে। চলতি মাসের শুরুর দিকে সিলেটের কিশোরী খেলার জন্য গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আসে। খেলা শেষে সে গাইবান্ধার কিশোরীর বাসায় থাকতে শুরু করে। মেয়েকে সিলেটে ফিরিয়ে নিতে মা গাইবান্ধায় যান। ২৩ ডিসেম্বর দুপুরে মেয়েকে সিলেটে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন তিনি। এই খবর শুনে গাইবান্ধার কিশোরী বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। সেটা ধোপে না টেকায় গাইবান্ধার কিশোরীটি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। সিলেটের কিশোরী বাঁ হাত ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলে। পরে দুজনকেই অসুস্থ অবস্থায় গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে দুই কিশোরীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরের দিন ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মেয়েকে সিলেটে নিয়ে যেতে চান তার মা। কিন্তু সিলেটের কিশোরী কোনোভাবেই যেতে রাজি হচ্ছিল না। ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তাকে নিয়ে সিলেটের উদ্দেশে বাসে করে রওনা দেন মা। বাসটি গোবিন্দগঞ্জে পৌঁছালে কিশোরীর জ্ঞান ফেরে। তখন সে বাসের জানালা দিয়ে ঝাঁপিয়ে নিচে পড়ে যায়। এতে তার হাত কেটে যায়। পরে তাকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে সে গাইবান্ধার কিশোরীর বাড়িতে চলে যায়।
এরপর ২৭ ডিসেম্বর মা-মেয়ে সিলেটে ফিরে গেছে। আর ঘটনা জানাজানি হওয়ায় গাইবান্ধার কিশোরীকে নিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
এ বিষয়ে আজ বুধবার দুপুরে গাইবান্ধা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুর রউফ বলেন, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ–সংক্রান্ত পোস্ট দেখেছেন। এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে দুই কিশোরীর পরিবারের কেউই থানায় অভিযোগ করেননি।
গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র মো. মতলুবর রহমান বলেন, ঘটনাটি তিনি লোকমুখে শুনেছেন। আজ সকালে গাইবান্ধার কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কিশোরীর বাবাকে পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনার দিন কিশোরীর বাবা স্থানীয় কাউন্সিলরকে বলেছিলেন, মেয়েটা এমন পাগলামি করবে, তিনি ভাবতেই পারছেন না।
Development by: webnewsdesign.com