কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে নির্বাচনী সহিংসতায় প্রতিপক্ষের মারধরে বাবলু মিয়া নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দাবিতে বুধবার (২৪ নভেম্বর) সকালে নিহতের মরদেহ নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের স্বজন মোহাম্মদ আলী জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নে উত্তর রাবাইটারী বটতলা বাজারে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় ওই ওয়ার্ডে তালা প্রতীকের প্রার্থী শাহজালাল নিজেই ফ্যান প্রতীক মুকুল মিয়ার কর্মী বাবুল মিয়াকে (৪০) গালমন্দ করেন।
তিনি আরও জানান, এক পর্যায়ে বাবুল মিয়াকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে আসেন শাহজালাল আলীর লোকজন। ফুলবাড়ী-নাগেশ্বরী সড়কের বটতলা বাজারে গাছের ডাল ও খড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর ও কিলঘুষি মারেন। স্থানীয়রা বাবলু মিয়াকে উদ্ধার করে নাগেশ্বরী শাপলা ক্লিনিকে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে মঙ্গলবার বাড়িতে আসলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি মারা যান।
মোহাম্মদ আলী জানান, নিহত বাবলু মিয়া উত্তর রাবাইটারী গ্রামের মৃত আজগার আলীর ছেলে। মৃত্যুর খবরে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ঘটনার মীমাংসার জন্য ওই রাতে দফায় দফায় বৈঠক চলে নিহতের বাড়িতে। পুলিশ ও প্রশাসন নিহতের বাড়ি যায়। পরিবারের লোকজন মরদেহ দাফনের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রশাসনও মরদেহ উদ্ধার না করে পরিবারকে দিয়ে চলে আসে।
মোহাম্মদ আলী বলেন, দাফন না করে এলাকাবাসী বুধবার সকালে মরদেহ রাস্তা এনে অবরোধ শুরু করেন। এতে উপজেলার রাবাইটারী এলাকার ফুলবাড়ী-নাগেশ্বরী সড়কে পথচারী ও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের দাবি শোনার পর অবরোধ তুলে নেন বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ফুলবাড়ী থানায় নিয়ে যায়।
ফ্যান প্রতীকের প্রার্থী মুকুল মিয়া বলেন, ২৮ নভেম্বর আমাদের ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য আমরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ করে আমার নিরপরাধকর্মীকে মারধর করে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
নিহতের স্ত্রী মমতা বেগম বলেন, রাতে মরদেহ দাফনের জন্য আমাকে চাপ দেওয়া হয়েছে। এজন্য ঝামেলায় না গিয়ে দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সকাল বেলা পরিবারের লোকজন সঠিক বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেন। আমিও সঠিক বিচার চাই।
নাগেশ্বেরী বি-সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার সুমন রেজা বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত আছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিমল চাকমা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশসহ নিহতের বাড়িতে যাওয়া হয়। স্বজনরা কোনো অভিযোগ না করে মরদেহ দাফনের অনুরোধ জানান। কিন্তু মঙ্গলবার আবারো বিচার চেয়ে রাস্তা অবরোধ করেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের দাবি শোনার পর মরদেহ নিয়ে আসা হয়েছে। মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পর পুলিশ ব্যবস্থা নিবে।
Development by: webnewsdesign.com