কুমিল্লা চান্দিনায় ইয়াবাসহ নাছির উদ্দিন (৩৮) নামে ডিবি পুলিশের এক সহকারি উপ-পরিদর্শক (এ.এস.আই) ও কাউসার (২৮) নামে তার এক সহযোগিকে আটক করেছে চান্দিনা থানা পুলিশ।
২৪ এপ্রিল মঙ্গলবার রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার কাঠেরপুল এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার সাথে থাকা ৪ হাজার পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে পুলিশ। তবে ঘটনার পরপর তার পুলিশী পরিচয় আড়াল করতে মরিয়া হয়ে উঠে চান্দিনা থানা পুলিশ। তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি।

আটক ইয়াবা পাচারকারী নাছির উদ্দিন কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার দোতলা গ্রামের টেম্পু চালক নূরু মিয়ার ছেলে। সে রাঙ্গামাটি জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের সহকারি উপ-পরিদর্শক (এ.এস.আই) পদে চাকুরীরত আছে। অপর সহযোগি কাউসার কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের বাসিন্দা।

চান্দিনা থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মহাসড়কের অভিযানের সময় মোটরসাইকেল যোগে দুই জন চান্দিনার দিকে আসছিলেন তিনি। এসময় সন্দেহ জনক অবস্থায় তার দেহ তল্লাশি করে ৪ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এসময় তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও আটক করে করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চান্দিনার দোতলা গ্রামের নূরু মিয়ার ছেলে নাছির উদ্দিন ২০০৬ সালে কনস্ট্রেবল পদে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে সহকারি উপ-পরিদর্শক (এ.এস.আই) পদে পদোন্নতি পান তিনি। তারপর থেকে রাতারাতি অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটতে থাকে তার। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে ২টি গাড়ি, নতুন বাড়ি এবং অনেক জমি-জমা কিনেন মাদক ব্যবসায়ী ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

কেরনখাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন-অর রশিদ জানান, পুলিশের এএসআই পদে চাকুরী করে মাত্র ২ বছরের মধ্যে গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়ে যাওয়ার বিষয়টি যেন আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার মত ঘটনা। এখন বুঝা যাচ্ছে পুলিশে চাকুরীর আড়ালে সে জমজমাট মাদক ব্যবসায় চালিয়ে আসছিল পুলিশ কর্মকর্তা নাছির।
এব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, ঘটনার পরপর নাছির উদ্দিন তার পরিচয় আড়াল করে। বিভিন্ন সূত্রে আমরা তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর সে তার পরিচয় স্বীকার করে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সে বর্তমানে রাঙ্গামাটি জেলা গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত আছে। বুধবার সকালে তাকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কুমিল্লা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) নাছির উদ্দিন মৃধা জানান, ইয়াবা পাচারে আটক পুলিশ কর্মকর্তার ব্যাপারে এখনও তথ্য নেওয়া হচ্ছে। আমরা রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার কার্যালয় সহ ডিবি কার্যালয়ের সাথে যোগাযোগ করছি।