আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ শেখ মুজিবকে সৃষ্টি করেছিলেন স্বাধীনতার জন্য, আর শেখ হাসিনাকে সৃষ্টি করেছেন এ জাতির অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। সাহসিকতা ও সততার জন্য সারা বিশ্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মান করে।’
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত কোটালীপাড়া উপজেলা আাওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই কথা বলেন তিনি।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কাদের বলেন, মুজিববর্ষে আওয়ামী লীগকে আমরা আগাছামুক্ত করতে চাই। ঘরের মধ্যে ঘর করবেন না। আওয়ামী লীগের নেতা হবে তারাই, যারা আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে ছিল। ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে পকেট কমিটি করলে আওয়ামী লীগ কোণঠাসা হয়ে পড়বে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রবীণ ও নবীনের সমন্বয়ে আওয়ামী লীগ চলবে। আওয়ামী লীগে কোনও সুবিধাবাদীর স্থান নেই। কোনও হাইব্রিড বসন্তের কোকিল আওয়ামী লীগের নেতা হতে পারবে না। আওয়ামী লীগের দুর্দিনের ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীরা নেতা হবেন।
কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগের নেতারা
দেশের নানা সফলতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর ২৪টি স্প্যান বসে গেছে। আর বছরখানেক লাগবে। তখন ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়ায় আসতে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি নেতারা নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে, আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে এখন বিদেশিদের কাছে নালিশ করে। এর মধ্য দিয়ে তারা দেশকে ছোট করে। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অন্ধকারের পরাশক্তি পরাজিত হয়েছে। আমরা আর তাদের ক্ষমতায় আসতে দেবো না। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, তারাই মূলধারা হিসেবে বাংলাদেশ চালাবো। আর কোনও অপশক্তি মসনদে বসতে পারবে না।
বিএনপির প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, কয়েক মাস পরপরই তারা বলে আন্দোলন করবেন। পরীক্ষার পর আন্দোলন, কোরবানির পর আন্দোলন, রমজানের পর আন্দোলন। দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়। দেখতে দেখতে এক বছর কেটে গেলো। আন্দোলন আর হয় না। আন্দোলন কোন বছর হবে? বিএনপির আন্দোলনের মরা গাঙে জোয়ার আসে না। মধুমতীতে জোয়ার আসবে ঠিকই। কিন্তু বিএনপির আন্দোলনের জোয়ার আসবে না। মির্জা ফখরুল আন্দোলনেও হারেন, নির্বাচনেও হারেন। বেচারা কী আর করবেন। হতাশায় আবোল তাবোল বক্তব্য দেন।
তিনি নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ পড়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বই কিনে বালিশের তলায় রেখে দেবেন না। পড়াশোনা করে রাজনীতি করতে হবে।’
কোটালীপাড়া উপজেলা আাওয়ামী লীগের সম্মেলন
সেতুমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষে আমরা সম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ উৎপাটন করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমরা আর কোনও অন্ধকারের অপশক্তি দেখতে চাই না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মূলধারা বাংলাদেশ চালাবে। এটাই হোক আমাদের শপথ।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুভাস চন্দ্র জয়ধরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এমপি, মির্জা আজম এমপি, এস এম কামাল হোসেন, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, কোটালীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, পৌর মেয়র এস এম কামাল হোসেন, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কমল সেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম হুমায়ুন কবীর প্রমুখ।
পরে দ্বিতীয় অধিবেশনে ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসকে কোটালীপাড়া উপজেলা আাওয়ামী লীগের সভাপতি ও মো. আয়নাল হোসেন শেখকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।
Development by: webnewsdesign.com