শবে কদরের পরের দিন সরকারি ছুটি। ছুটির দিনেও অবশ্য মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে অনেক ব্যস্ততা। দুপুরেই দুই জায়ান্ট ঢাকা আবাহনী ও মেরিনার্স সুপার সিক্সের ম্যাচ। মেরিনার্স ২-১ গোলে ঢাকা আবাহনীকে পরাজিত করেছে। চলতি মৌসুমে তিন বারই মেরিনার্সের বিপক্ষে হারল আবাহনী। ক্লাব কাপের ফাইনালের পর লিগের দুই পর্বেই মেরিনার্স আবাহনীর বিপক্ষে জিতল।
মেরিনার্সের আজকের জয়ে শিরোপা দৌড়ে মোহামেডান অনেকটা এগিয়ে থাকল। ১২ ম্যাচে মোহামেডানের পয়েন্ট ৩২। সমান ম্যাচে আবাহনী ও মেরিনার্সের ২৮। ফলে মোহামডোনের বাকি তিন ম্যাচের মধ্যে দু’টিতে জিতলেই চ্যাম্পিয়ন। মোহামেডানের শেষ তিন ম্যাচই বড় প্রতিপক্ষ মেরিনার্স, আবাহনী ও উষা।
আবাহনীর হার স্টেডিয়ামে বসেই দেখেছেন মোহামেডানের অধিনায়ক রাসেল মাহমুদ জিমি। চার পয়েন্ট লীড পেলেও এখনো শিরোপার ঘ্রাণ পাচ্ছেন না অধিনায়ক, ‘আমাদের সামনে বড় তিন ম্যাচ। তিন ম্যাচই জয়ের লক্ষ্য আমাদের। নিজেদের জিততে হবে না হলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব নয়।’
লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা মেরিনার ইয়াংস। সুপার সিক্সে তারা দুই ম্যাচেই উষা ও আবাহনী দুই জায়ান্টকে হারিয়েছে। দলটির কোচ মামুনুর রশীদ এখনো লিগ শিরোপা উন্মুক্ত দেখেন, ‘সুপার সিক্সে একটি ম্যাচ হারলেই অনেক পিছিয়ে পড়তে হবে। আমরা মোহামেডানকে হারাতে পারলে শিরোপা দৌড়ে আরো একটু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব। তবে এই মুহূর্তে মোহামডোন অবশ্যই এগিয়ে।’
চলতি মৌসুমে কাগজ-কলমে এগিয়ে ঢাকা আবাহনী। ধানমন্ডির ক্লাবটির বাজেট অন্য তিন দলের প্রায় সমানই।অপেক্ষাকৃত দুর্বল হয়েও টানা তিনবার আবাহনীকে হারানোর নেপথ্যের কারণ হিসেবে মেরিনার্সের কোচ মামুন বলেন, ‘আমরা আবাহনীকে নিয়ে অনেক ভিডিও সেশন করেছি। তাদের সেভাবে খেলতেই দেইনি এবং কাউন্টার থেকে আমরা দুই গোল করেছি। হকিতে দুই গোল ডিফেন্ড করা অনেক কঠিন। এরপরও সেটা আমরা করতে সক্ষম হয়েছি।’
লিগের নয় রাউন্ড পর্যন্ত আবাহনী এককভাবে টেবিলের শীর্ষে ছিল। মেরিনার্সের বিপক্ষে দুই হারে এখন তারা ব্যাকফুটে। এই পরিস্থিতিতে বেশ বিব্রত আবাহনীর ম্যানেজম্যান্ট। আজ ম্যাচের পর অসন্তোষ দেখা গেল সবার মধ্যেই। হকিতে আবাহনী প্রথমবারের মতো বিদেশি কোচ এনেছে। সেই ভারতীয় কোচ সিদ্ধার্থ মায়ুর পান্ডে শিরোপা জিততে অন্যের সহায়তা চান, ‘প্রতিপক্ষ চার পয়েন্ট এগিয়ে। এখন আর আসলে আমাদের নিজেদের হাতে সব কিছু নেই। আমরা ভালো খেলছি ঠিকই কিন্তু গোল মিস করছি, ভুল করছি তাই এই অবস্থা।’
আজ আবাহনীর বিরুদ্ধে খেলার ২০ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন মেরিনার্সের সোহানুর রহমান সবুজ (১-০)। ২৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে দলটি। পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে গোল করেন মেরিনার্স অধিনায়ক ফজলে হোসেন রাব্বি (২-০)। ৩৩ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করে ব্যবধান কমান আবাহনীর ভারতীয় শিশে গাওয়াদ (২-১)।
এই গোল নিয়ে অবশ্য মেরিনার্স রিভিউ চেয়েছিল। সেই রিভিউতে মেরিনার্সের অধিনায়কের পায়ে বল লাগতে দেখা যায়। এরপরও বিদেশি ভিডিও আম্পায়ার গোলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। এতে মেরিনার্স কয়েক মিনিট খেলা থেকে বিরত থাকে। এই প্রতিবাদ ছাড়া আজকের ম্যাচে তেমন কোনো বিপত্তি ছিল না।
শেষ কোয়ার্টার আবাহনী সমতা আনার জন্য মরিয়া ছিল। শেষ তিন মিনিট গোলরক্ষক ছাড়াই খেলেছে। এরপরও কাঙ্ক্ষিত গোল আদায় করতে পারেনি।
Development by: webnewsdesign.com